শীতের দিনে কুয়াশা পড়ে কেন এবং কীভাবে এটি তৈরি হয়

Mohammad Raihan Uddin
  • আপডেট সময় : 06:39:18 am, Sunday, 27 October 2024 61 বার পড়া হয়েছে

শীতের দিনে কুয়াশা পড়ে কেন

শেষ হতে চলেছে গরম। অনেকটাই কমে গেছে দিনে এবং রাতের তাপমাত্রা। আর কিছুদিন পরে আসতে চলেছে শীতকাল। শীতের দিনে কুয়াশা পড়ে কেন এ সম্পর্কে কি আপনি জানেন? বাংলাদেশের আবহাওয়া বেশ বৈচিত্র্যময়। আর এই বৈচিত্রতার পেছনে রয়েছে নানা ধরনের কারণ। চলুন আজকে সেরকমই একটি রহস্য সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি।

শীতের দিনে কুয়াশা পড়ে কেন?

আমাদের দেশে শীতকালে সাদা কুয়াশায় চারদিক একেবারে ঢেকে যায়। শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে এটির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। এর পেছনে অবশ্য কিছু প্রকৃতিক ঘটনা রয়েছে। চলুন সে সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেই।

১। তাপমাত্রা কমার কারণে বাতাসে থাকা জ্বলীয় বাষ্প আস্তে আস্তে ঘনীভূত হয়ে কুয়াশা তৈরি করে। আর যেহেতু দিনের চাইতে রাতের তাপমাত্রা অনেক বেশি কমে যায় তাই কুয়াশার পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। যার কারণে রাতে কুয়াশা পড়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

২। শীতকালে রাতে কুয়াশা পড়ার অন্যতম আরেকটি কারণ হচ্ছে বাতাসের আর্দ্রতা। বাতাস যত বেশি আর্দ্র হবে কুয়াশার ঘনত্ব তত বেশি হবে। এত খেয়াল করে দেখবেন নদীর তীরবর্তী কিংবা খাল বিলের আশেপাশের সাদা কুয়াশার পরিমাণ বেশি থাকে।

৩। আপনারা নিশ্চয়ই পানি গরম করার সময় চুলার উপর দিয়ে সাদা ধোঁয়া বের হতে দেখেছেন। এটি ঘটার কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় পানি জ্বলীয় বাষ্প হয়ে হালকা হয়ে যায়। প্রকৃতিতেও অনেক সময় এই ধরনের ঘটনা ঘটে এবং কুয়াশার তৈরি হয়।

৪। আবার উঁচু এলাকার চাইতে নিচু এলাকা গুলোতেও এটির পরিমাণ বেশি দেখা যায়। এর কারণ হচ্ছে জ্বলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস গুলি উপর থেকে নিচের দিকে নামার চেষ্টা করে। পাহাড়ের উপরে এলাকা গুলিতে দেখবেন এর পরিমাণ অনেক কম।

গ্রামের চেয়ে শহরে কুয়াশার পরিমাণ কম থাকে কেন

প্রকৃতির সব সময় গ্রাম এলাকাতে বেশি স্নিগ্ধ। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে শহর এলাকা গুলোতে অতিরিক্ত যানজট, ধুলাবালি, কলকারখানার ধোঁয়া ইত্যাদি থাকে। যার কারণে পরিবেশ তার নিজস্ব রূপে বিকাশিত হতে পারে না।

আগেই বলেছি কুয়াশা তৈরি হওয়ার জন্য অবশ্যই তাপমাত্রা কমতে হবে। শহরের গাছপালা একদমই কম থাকে। এছাড়াও সারাদিন যখন বিল্ডিং গুলোর উপরে রোদ পড়ে সেটি উত্তপ্ত হয় এবং রাতের বেলায় তাপমাত্রা বিকিরণ করে। যার কারণে দিন ও রাত উভয় সময়ে পরিবেশ বেশ গরম থাকে। আর এই ধরনের পরিবেশে কুয়াশা তৈরি কঠিন ব্যাপার।

আর গ্রামে রয়েছে প্রচুর সবুজ গাছপালা, নদী-নালা, খাল বিল ইত্যাদি। এছাড়াও কলকারখানার কালো ধোঁয়া নেই। তাইতো শহরের তুলনায় গ্রামে কুয়াশা পড়ে বেশি।

আপনি যদি গ্রামে বসবাস করে থাকেন তাহলে সকালবেলা নদীর কিনারায় হেঁটে দেখবেন। অন্যান্য যে কোন স্থানের চাইতে সেখানে এতটাই কুয়াশা দেখতে পারবেন যে চোখে দেখা মুশকিল হয়ে পড়ে। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন রাতে কুয়াশা পড়ে কেন। আবার শীতকালে কুয়াশা পড়ার কারণ কি সেটা সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। এ ধরনের আরো মজার মজার কনটেন্ট করতে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য লেখাগুলি ভিজিট করতে পারেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার ঘরের বাতাস দূষণমুক্ত করার উপায় জানতে এখানে প্রবেশ করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

শীতের দিনে কুয়াশা পড়ে কেন এবং কীভাবে এটি তৈরি হয়

আপডেট সময় : 06:39:18 am, Sunday, 27 October 2024

শেষ হতে চলেছে গরম। অনেকটাই কমে গেছে দিনে এবং রাতের তাপমাত্রা। আর কিছুদিন পরে আসতে চলেছে শীতকাল। শীতের দিনে কুয়াশা পড়ে কেন এ সম্পর্কে কি আপনি জানেন? বাংলাদেশের আবহাওয়া বেশ বৈচিত্র্যময়। আর এই বৈচিত্রতার পেছনে রয়েছে নানা ধরনের কারণ। চলুন আজকে সেরকমই একটি রহস্য সম্পর্কে জানার চেষ্টা করি।

শীতের দিনে কুয়াশা পড়ে কেন?

আমাদের দেশে শীতকালে সাদা কুয়াশায় চারদিক একেবারে ঢেকে যায়। শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে এটির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। এর পেছনে অবশ্য কিছু প্রকৃতিক ঘটনা রয়েছে। চলুন সে সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেই।

১। তাপমাত্রা কমার কারণে বাতাসে থাকা জ্বলীয় বাষ্প আস্তে আস্তে ঘনীভূত হয়ে কুয়াশা তৈরি করে। আর যেহেতু দিনের চাইতে রাতের তাপমাত্রা অনেক বেশি কমে যায় তাই কুয়াশার পরিমাণও বৃদ্ধি পায়। যার কারণে রাতে কুয়াশা পড়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়।

২। শীতকালে রাতে কুয়াশা পড়ার অন্যতম আরেকটি কারণ হচ্ছে বাতাসের আর্দ্রতা। বাতাস যত বেশি আর্দ্র হবে কুয়াশার ঘনত্ব তত বেশি হবে। এত খেয়াল করে দেখবেন নদীর তীরবর্তী কিংবা খাল বিলের আশেপাশের সাদা কুয়াশার পরিমাণ বেশি থাকে।

৩। আপনারা নিশ্চয়ই পানি গরম করার সময় চুলার উপর দিয়ে সাদা ধোঁয়া বের হতে দেখেছেন। এটি ঘটার কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত তাপমাত্রায় পানি জ্বলীয় বাষ্প হয়ে হালকা হয়ে যায়। প্রকৃতিতেও অনেক সময় এই ধরনের ঘটনা ঘটে এবং কুয়াশার তৈরি হয়।

৪। আবার উঁচু এলাকার চাইতে নিচু এলাকা গুলোতেও এটির পরিমাণ বেশি দেখা যায়। এর কারণ হচ্ছে জ্বলীয় বাষ্পপূর্ণ বাতাস গুলি উপর থেকে নিচের দিকে নামার চেষ্টা করে। পাহাড়ের উপরে এলাকা গুলিতে দেখবেন এর পরিমাণ অনেক কম।

গ্রামের চেয়ে শহরে কুয়াশার পরিমাণ কম থাকে কেন

প্রকৃতির সব সময় গ্রাম এলাকাতে বেশি স্নিগ্ধ। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে শহর এলাকা গুলোতে অতিরিক্ত যানজট, ধুলাবালি, কলকারখানার ধোঁয়া ইত্যাদি থাকে। যার কারণে পরিবেশ তার নিজস্ব রূপে বিকাশিত হতে পারে না।

আগেই বলেছি কুয়াশা তৈরি হওয়ার জন্য অবশ্যই তাপমাত্রা কমতে হবে। শহরের গাছপালা একদমই কম থাকে। এছাড়াও সারাদিন যখন বিল্ডিং গুলোর উপরে রোদ পড়ে সেটি উত্তপ্ত হয় এবং রাতের বেলায় তাপমাত্রা বিকিরণ করে। যার কারণে দিন ও রাত উভয় সময়ে পরিবেশ বেশ গরম থাকে। আর এই ধরনের পরিবেশে কুয়াশা তৈরি কঠিন ব্যাপার।

আর গ্রামে রয়েছে প্রচুর সবুজ গাছপালা, নদী-নালা, খাল বিল ইত্যাদি। এছাড়াও কলকারখানার কালো ধোঁয়া নেই। তাইতো শহরের তুলনায় গ্রামে কুয়াশা পড়ে বেশি।

আপনি যদি গ্রামে বসবাস করে থাকেন তাহলে সকালবেলা নদীর কিনারায় হেঁটে দেখবেন। অন্যান্য যে কোন স্থানের চাইতে সেখানে এতটাই কুয়াশা দেখতে পারবেন যে চোখে দেখা মুশকিল হয়ে পড়ে। আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন রাতে কুয়াশা পড়ে কেন। আবার শীতকালে কুয়াশা পড়ার কারণ কি সেটা সম্পর্কেও স্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পেরেছেন। এ ধরনের আরো মজার মজার কনটেন্ট করতে আমাদের ওয়েবসাইটের অন্যান্য লেখাগুলি ভিজিট করতে পারেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার ঘরের বাতাস দূষণমুক্ত করার উপায় জানতে এখানে প্রবেশ করুন