একজন সরকারি চাকরিজীবির বেতন কত এবং কি সুবিধা পেয়ে থাকেন

Mohammad Raihan Uddin
  • আপডেট সময় : 01:03:25 pm, Tuesday, 19 November 2024 56 বার পড়া হয়েছে

সরকারি চাকরিজীবির বেতন কত

বাংলাদেশের প্রতিনিয়ত বেসরকারি এবং সরকারী উভয় ধরনের চাকরিতে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাইভেট জব গুলো সম্পর্কে তো আমাদের অনেকটাই ধারণা রয়েছে তবে সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে আজকে আমরা জানবো।

বাংলাদেশের গভর্নমেন্ট জবের বর্তমানে প্রায় ২০ টি গ্রেড রয়েছে। এসকল গ্রেডের উপরে নির্ভর করেই একজন কর্মকর্তা বেতন পেয়ে থাকেন। যদিও বর্তমানে প্রাইভেট জব গুলোর চাহিদা ও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তবুও লেখাপড়া শেষ করে সবারই আকাঙ্খা থাকে একটি গভারমেন্ট জবের।

সরকারি চাকরিতে গ্রেড নিয়ম কি

সর্বমোট ২০টি গ্রডের মধ্যে সর্বোচ্চ মর্যাদার হচ্ছে গ্রেট-১। সাধারণত সচিবেরা এই গ্রেডে চাকরি করে থাকেন। বেতন ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও এটিতে বেশি। তারপর পদ অনুযায়ী আস্তে আস্তে নিচের গ্রেড গুলোতে লোকবল নিয়োগ প্রদান করা হয়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সরকারি কলেজের একজন অধ্যক্ষ অসাধারনত গ্রেড-৪ এ চাকরি করে থাকেন। পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরের গ্রেড হচ্ছে ১০। এভাবে প্রতিটি সরকারি কর্মকর্তারাই বিভিন্ন গ্রেডের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকেন।

গ্রেড ১ প্রথম মর্যাদার কর্মকর্তাদের বেতন হচ্ছে ৭৮ হাজার টাকা। বেতন ছাড়াও তারা বিভিন্ন ধরনের ভাতা এবং সুবিধা পেয়ে থাকেন। আবার সবচাইতে কম অর্থাৎ গ্রেট-২০ এর একজন কর্মচারীর বেতন হচ্ছে ৮২৫০ থেকে ২০ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক ১৩তম গ্রেডে চাকরি করে থাকেন এবং বেতন পান ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা পর্যন্ত। সেনাবাহিনীর একজন মেজরের বেতন ৪৩,০০০-৬৯,৮৫০ টাকা পর্যন্ত।

যখন কোন সরকারি চাকরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় তখন সেই পদের গ্রেড, বেতন, ভাতা এবং সুবিধা গুলি উল্লেখ করা থাকে। একজন প্রার্থী সে সকল শর্তে রাজি হয়ে আবেদন করে এবং চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়ে যোগদান করে থাকে।

সরকারি চাকরিতে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা

দীর্ঘদিন চাকরি করার পর প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারী একটি পেনশন সুবিধা পেয়ে থাকেন। যার কিছু অংশ অবসর গ্রহণের সময় প্রদান করা হয় এবং বাকি অংশ হতে প্রতি মাসে বেতন প্রদান করা হয়। অর্থাৎ কর্মজীবন শেষ করার পরেও একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রতিমাসে বেতন এবং অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকেন।

এছাড়াও কোন বিভাগে কর্মরত আছেন সেই অনুযায়ী আবাসিক সুবিধা, রেশন সুবিধা, চিকিৎসা সুবিধা, সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধা ইত্যাদি প্রদান করা হয়ে।

যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অর্থাৎ পুলিশ বা প্রতিরক্ষা বাহিনী (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী) ইত্যাদিতে যারা চাকুরী করে থাকেন তাদের রয়েছে জাতিসংঘ মিশনে গিয়ে আর্থিক সচ্ছলতা আনয়নের সুযোগ। এমনকি যোগ্যতা এবং দক্ষতার ভিত্তিতে নিজ ডিপার্টমেন্ট ছাড়াও অন্যান্য সরকারি কাজে দায়িত্ব পালন করে অতিরিক্ত কিছু অর্থ আয় করতে পারেন।

বাংলাদেশের সকল প্রাইভেট কিংবা সরকারি চাকরিজীবীরা এই বছরে অন্তত দুটি উৎসব পেয়ে থাকেন। যার মধ্যে একটি হচ্ছে ঈদুল আযহা এবং অপরটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর। কিছু কিছু প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে পূজার জন্যও বোনাস প্রদান করা হয় সনাতন ধর্মালম্বীদের।

সরকারি চাকরি এবং বেসরকারি চাকরির মধ্য কোনটি ভালো

বিভিন্ন আনুষঙ্গিক বিষয় গুলো বিবেচনা করলে উভয়েরই কিছু সুবিধার পাশাপাশ অল্প কিছু অসুবিধা রয়েছে। প্রাইভেট বা বেসরকারি জব গুলোতে আপনি পেনশন সুবিধা খুব বেশি পাবেন না। আবার গভারমেন্ট জব গুলোতে আপনাকে নির্দিষ্ট বেতন স্কেল এবং নিয়ম অনুযায়ী প্রমোশন প্রদান করা হবে। অর্থাৎ আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন আপনার ক্যারিয়ারকে অনেক বেশি দ্রুতগতিতে এগিয়ে পারবেন ন।

অপরদিকে প্রাইভেট জব গুলোতে আপনি কঠোর পরিশ্রম পড়ার পাশাপাশি প্রচুর স্টাডি করলে অল্প কিছুদিনেই অনেক টাকা বেতন অর্জন করতে পারেন।

প্রাইভেট জব গুলি থেকে খুব সহজেই অব্যাহতি নেওয়া যায়। কিন্তু গভর্মেন্ট জব গুলোতে বেশকিছু শর্ত রয়েছে।

বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে এনজিও প্রতিষ্ঠান গুলোর দিকেও তরুন তরুণীরা বেশ আগ্রহ প্রকাশ করছে। গভারমেন্ট জবের মতই এগুলোতে সপ্তাহে দুই দিন ছুটি, চাকুরী জীবন শেষে গ্র্যাচুয়িটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড সহ নানা ধরনের সুবিধে রয়েছে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রিপারেশন নিতে হবে। এক এক ধরনের চাকরির প্রস্তুতি একেক রকম হয়ে থাকেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বা প্রতিরক্ষা বাহিনীতে নিয়োগ পাওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি থাকতে হয় শারীরিক যোগ্যতা। তরুণদের মাঝে সবচাইতে জনপ্রিয় বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম এবং ব্যাপক প্রস্তুতি। আবার প্রাইভেট জব গুলোতেও নিজের যোগ্যতা প্রমাণ ও ক্যারিয়ারে উন্নতির জন্য সবসময়ই শেখার মধ্যে থাকতে হয়। অর্থাৎ বেসরকারি কিংবা সরকারি চাকরি উভয় ক্ষেত্রেই সুবিধা পাওয়ার জন্য আপনাকে পরিশ্রম করতেই হবে। তাই আগে নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সেই অনুযায়ী আগাতে থাকুন।

মোবাইলে ব্যক্তিগত ছবি লুকিয়ে রাখার উপায় কি? জানতে এখানে প্রবেশ করুন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

একজন সরকারি চাকরিজীবির বেতন কত এবং কি সুবিধা পেয়ে থাকেন

আপডেট সময় : 01:03:25 pm, Tuesday, 19 November 2024

বাংলাদেশের প্রতিনিয়ত বেসরকারি এবং সরকারী উভয় ধরনের চাকরিতে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রাইভেট জব গুলো সম্পর্কে তো আমাদের অনেকটাই ধারণা রয়েছে তবে সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে আজকে আমরা জানবো।

বাংলাদেশের গভর্নমেন্ট জবের বর্তমানে প্রায় ২০ টি গ্রেড রয়েছে। এসকল গ্রেডের উপরে নির্ভর করেই একজন কর্মকর্তা বেতন পেয়ে থাকেন। যদিও বর্তমানে প্রাইভেট জব গুলোর চাহিদা ও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে তবুও লেখাপড়া শেষ করে সবারই আকাঙ্খা থাকে একটি গভারমেন্ট জবের।

সরকারি চাকরিতে গ্রেড নিয়ম কি

সর্বমোট ২০টি গ্রডের মধ্যে সর্বোচ্চ মর্যাদার হচ্ছে গ্রেট-১। সাধারণত সচিবেরা এই গ্রেডে চাকরি করে থাকেন। বেতন ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও এটিতে বেশি। তারপর পদ অনুযায়ী আস্তে আস্তে নিচের গ্রেড গুলোতে লোকবল নিয়োগ প্রদান করা হয়।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সরকারি কলেজের একজন অধ্যক্ষ অসাধারনত গ্রেড-৪ এ চাকরি করে থাকেন। পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরের গ্রেড হচ্ছে ১০। এভাবে প্রতিটি সরকারি কর্মকর্তারাই বিভিন্ন গ্রেডের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকেন।

গ্রেড ১ প্রথম মর্যাদার কর্মকর্তাদের বেতন হচ্ছে ৭৮ হাজার টাকা। বেতন ছাড়াও তারা বিভিন্ন ধরনের ভাতা এবং সুবিধা পেয়ে থাকেন। আবার সবচাইতে কম অর্থাৎ গ্রেট-২০ এর একজন কর্মচারীর বেতন হচ্ছে ৮২৫০ থেকে ২০ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক ১৩তম গ্রেডে চাকরি করে থাকেন এবং বেতন পান ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা পর্যন্ত। সেনাবাহিনীর একজন মেজরের বেতন ৪৩,০০০-৬৯,৮৫০ টাকা পর্যন্ত।

যখন কোন সরকারি চাকরি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয় তখন সেই পদের গ্রেড, বেতন, ভাতা এবং সুবিধা গুলি উল্লেখ করা থাকে। একজন প্রার্থী সে সকল শর্তে রাজি হয়ে আবেদন করে এবং চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়ে যোগদান করে থাকে।

সরকারি চাকরিতে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা

দীর্ঘদিন চাকরি করার পর প্রতিটি কর্মকর্তা-কর্মচারী একটি পেনশন সুবিধা পেয়ে থাকেন। যার কিছু অংশ অবসর গ্রহণের সময় প্রদান করা হয় এবং বাকি অংশ হতে প্রতি মাসে বেতন প্রদান করা হয়। অর্থাৎ কর্মজীবন শেষ করার পরেও একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রতিমাসে বেতন এবং অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকেন।

এছাড়াও কোন বিভাগে কর্মরত আছেন সেই অনুযায়ী আবাসিক সুবিধা, রেশন সুবিধা, চিকিৎসা সুবিধা, সন্তানদের লেখাপড়ার সুবিধা ইত্যাদি প্রদান করা হয়ে।

যারা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অর্থাৎ পুলিশ বা প্রতিরক্ষা বাহিনী (সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী) ইত্যাদিতে যারা চাকুরী করে থাকেন তাদের রয়েছে জাতিসংঘ মিশনে গিয়ে আর্থিক সচ্ছলতা আনয়নের সুযোগ। এমনকি যোগ্যতা এবং দক্ষতার ভিত্তিতে নিজ ডিপার্টমেন্ট ছাড়াও অন্যান্য সরকারি কাজে দায়িত্ব পালন করে অতিরিক্ত কিছু অর্থ আয় করতে পারেন।

বাংলাদেশের সকল প্রাইভেট কিংবা সরকারি চাকরিজীবীরা এই বছরে অন্তত দুটি উৎসব পেয়ে থাকেন। যার মধ্যে একটি হচ্ছে ঈদুল আযহা এবং অপরটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর। কিছু কিছু প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে পূজার জন্যও বোনাস প্রদান করা হয় সনাতন ধর্মালম্বীদের।

সরকারি চাকরি এবং বেসরকারি চাকরির মধ্য কোনটি ভালো

বিভিন্ন আনুষঙ্গিক বিষয় গুলো বিবেচনা করলে উভয়েরই কিছু সুবিধার পাশাপাশ অল্প কিছু অসুবিধা রয়েছে। প্রাইভেট বা বেসরকারি জব গুলোতে আপনি পেনশন সুবিধা খুব বেশি পাবেন না। আবার গভারমেন্ট জব গুলোতে আপনাকে নির্দিষ্ট বেতন স্কেল এবং নিয়ম অনুযায়ী প্রমোশন প্রদান করা হবে। অর্থাৎ আপনি যতই চেষ্টা করুন না কেন আপনার ক্যারিয়ারকে অনেক বেশি দ্রুতগতিতে এগিয়ে পারবেন ন।

অপরদিকে প্রাইভেট জব গুলোতে আপনি কঠোর পরিশ্রম পড়ার পাশাপাশি প্রচুর স্টাডি করলে অল্প কিছুদিনেই অনেক টাকা বেতন অর্জন করতে পারেন।

প্রাইভেট জব গুলি থেকে খুব সহজেই অব্যাহতি নেওয়া যায়। কিন্তু গভর্মেন্ট জব গুলোতে বেশকিছু শর্ত রয়েছে।

বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে এনজিও প্রতিষ্ঠান গুলোর দিকেও তরুন তরুণীরা বেশ আগ্রহ প্রকাশ করছে। গভারমেন্ট জবের মতই এগুলোতে সপ্তাহে দুই দিন ছুটি, চাকুরী জীবন শেষে গ্র্যাচুয়িটি ও প্রভিডেন্ট ফান্ড সহ নানা ধরনের সুবিধে রয়েছে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশ করার জন্য আপনাকে অবশ্যই প্রিপারেশন নিতে হবে। এক এক ধরনের চাকরির প্রস্তুতি একেক রকম হয়ে থাকেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বা প্রতিরক্ষা বাহিনীতে নিয়োগ পাওয়ার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার পাশাপাশি থাকতে হয় শারীরিক যোগ্যতা। তরুণদের মাঝে সবচাইতে জনপ্রিয় বিসিএস পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন কঠোর পরিশ্রম এবং ব্যাপক প্রস্তুতি। আবার প্রাইভেট জব গুলোতেও নিজের যোগ্যতা প্রমাণ ও ক্যারিয়ারে উন্নতির জন্য সবসময়ই শেখার মধ্যে থাকতে হয়। অর্থাৎ বেসরকারি কিংবা সরকারি চাকরি উভয় ক্ষেত্রেই সুবিধা পাওয়ার জন্য আপনাকে পরিশ্রম করতেই হবে। তাই আগে নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সেই অনুযায়ী আগাতে থাকুন।

মোবাইলে ব্যক্তিগত ছবি লুকিয়ে রাখার উপায় কি? জানতে এখানে প্রবেশ করুন।