ছেলেদের ঘন ঘন শেভ করলে কি দাড়ি গজায়

- আপডেট সময় : 04:35:12 pm, Thursday, 28 November 2024 39 বার পড়া হয়েছে
ছেলেরা যে সকল বিষয় নিয়ে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন থাকে তার মধ্যে অন্যতম দাড়ি হচ্ছে কিংবা গোফ না ওঠা। কারো কারো আবার উঠলেও আশানুরূপ ঘন হয় না। আমাদের সমাজে একটি প্রচলিত ধারণা হচ্ছে ঘন ঘন শেভ করলে দাড়ি গজায়। তাইতো অনেকেই এই চেষ্টাটাই করে থাকে।
আজকে বিশেষজ্ঞদের মতে এই বিষয়টা নিয়ে খুটিনাটি আলোচনা করব। বয়োসন্ধিকালের একটি প্রধান লক্ষণ হচ্ছে মুখে দাড়ি ওঠা। আমাদের দেশের সাধারণত ১৫ থেকে ১৬ বছরের কিশোরদের মধ্যে দাঁড়ি গজাতে শুরু করে। সেই সাথে শরীরেও আসে না নানা ধরনের পরিবর্তন। তবে সকল কিশোরদের যে একই সময়ে শারীরিক পরিবর্তন গুলি হবে বিষয়টি তা নয়। একেকজনের ক্ষেত্রে ঘটনা একেক রকম হয়ে থাকে।
আবার অনেকেই যারা দাড়ি ওঠার শুরুতেই ঘন ঘন শেভ করে থাকেন তাদের ক্ষেত্রেও ধারণাটি ভুল। যাদের ঘন দাঁড়ি হওয়ার তাদের না করলেও হয়।
বিভিন্ন গবেষকরা দাবি করে থাকেন দাঁড়ি ওঠার সময় ব্যক্তি ভেদে কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। কারো কারো বয়োসন্ধিকালের প্রথম দিকে দাঁড়ি গজায় আবার কারো কারো শেষের দিকে। আবার কারো কারো ২০ বছর বয়স পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। অনেক করতে আবার সারা জীবনেও ঘন দাড়ি উঠে না।
তবে দাড়ি ঘন হওয়ার পেছনে কি কি নিয়ামক থাকে? বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে জানা যায় পুরুষের দাঁড়ি কতটা ঘন এবং বৃদ্ধি পাবে সেটা নির্ভর করে মূলত জেনেটিক এবং হরমোনের বিষয় গুলির উপরে। এছাড়াও খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনযাপনের কিছুটা প্রভাব বিস্তার করে থাকে।
দেহের টেস্টোস্টেরন হরমোন দাড়ি বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। তবে এর পরিমাণ মানুষ এবং বয়স ভেদে অনেকটাই আলাদা হতে পারে। তার ওপর জিনগত প্রভাব তো রয়েছেই।
ঘন ঘন সেভ করলে কি দাড়ি গজায়
আপনি যদি কিছুদিন পরপর চুল কাটেন কিংবা শেভ করেন তাহলে কখনোই এটির ঘনত্ব বৃদ্ধি পাবে না। এই ধারণাটি মানুষের মধ্য গেঁথে গিয়েছে, কারণ শেভ কিংবা চুল কাটার পরে যখন নতুন করে গজায় তখন কিছুটা ভিন্নতা অনুভব হয়। এক্ষেত্রে নতুন চুল এবং দাড়ি গুলি খানিকটা কালো এবং ঘন দেখায়। কিন্তু কিছুদিন পর আবার সেই আগের মতই মনে হয়। তাই পর পর ন্যাড়া করলে কিংবা ঘন ঘন শেভ করলে দাড়ি গজায় এ ধারণাটি সম্পন্ন সঠিক নয়। অর্থাৎ এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।
ঘন দাড়ি গজানোর উপায় কি
যেহেতু এটা মানুষের জেনেটিক বৈশিষ্ট্য তাই পরিবর্তন করারও তেমন কোনো সুযোগ নেই। তবে স্বাস্থ্যকর খাবার এবং জীবন যাপনের কিছু নিয়ামক অনুসরণ করে কিছুটা পরিবর্তন করা সম্ভব হতে পারে। চলুন সে সম্পর্কে জানা নেই।
সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা
মেডিকেল নিউজ একটি চিকিৎসা বিষয়ক ওয়েবসাইট যারা ২০১৫ সালের একটি প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছিল যে, কিছু কিছু ভিটামিন আছে যা আমাদের মুখে দাড়ি গুলোতে সাহায্য করে। এই ধরনের ভিটামিন গুলো পাওয়া যায় মাছ, ডিম, দুধ ইত্যাদি খাবারে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো
সুস্বাস্থ্যের জন্য ঘুম অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি নিয়ামক। আবার সারা রাত জেগে দিনের বেলা ঘুমালেও সেটি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। তাই মুখে দাড়ি গজানোর উপায় হিসেবে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো।
মুখের ত্বক পরিষ্কার রাখা
আপনার মুখের স্কিন যত পরিষ্কার থাকবে দাড়ি উঠতে তত বেশি সহজ হবে। পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি ত্বককে আর্দ্র রাখতে হবে।
ধূমপান ত্যাগ করা
অতিরিক্ত ধূমপান এবং অ্যালকোহল জাতীয় উপাদান আমাদের শরীরের পুষ্টি সরবরাহকারী ডিএনএর ক্ষতি সাধিত করে। তাই ঘন ঘন শেভ করে দাড়ি গজানোর উপায় না খোঁজে ধূমপান এবং অন্যান্য অ্যালকোহল জাতীয় অভ্যাস গুলি পরিত্যাগ করুন।
আমাদের শেষ কথা
উপরিক্ত আলোচনা গুলো থেকে অন্ততপক্ষে এটি নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ঘন ঘন শেভ করলে দাড়ি গজায় এ ধরনের ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুল। জিনগত এবং হরমোনের কারণে দাড়ি গজানো নির্ভর করে বিধায় এর উপর আমাদের তেমন কোন হস্তক্ষেপ করার সুযোগ নেই। তবে আপনার মুখে যদি একেবারেই দাড়ি না থাকে তাহলে বিশেষজ্ঞ কোন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন।