বেশিরভাগ ল্যাপটপে লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়। দীর্ঘ সময় ব্যবহারের ফলে এই আয়ন গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে এবং বেশিক্ষণ চার্জ ধরে রাখতর পারে না। কিন্তু বিশেষ কিছু উপায় অবলম্বন করে আপনিও ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখতে পারেন। আধুনিক অপারেটিং সিস্টেম গুলোতেই চার্জিং এবং ব্যাটারির জন্য বিশেষ কিছু ফিরচর দেওয়া হয়ে থাকে।

ব্যবহার করুন পাওয়ার মুড

সাধারণত তিনটি পাওয়ার মুড ল্যাপটপ ব্যবহার করা যায়। যার মধ্যে একটি হচ্ছে বেস্ট পারফরম্যান্স, একটা হচ্ছে ব্যালেন্স এবং আরেকটি হচ্ছে বেস্ট পাওয়ার ইফিসিয়েন্সি। উইন্ডোজ ১১ এবং ১০ অপারেটিং সিস্টেমে আপনি এই ফিচার গুলো পেয়ে যাবেন।

যদি আপনি ব্যালেন্স বা পাওয়ার ইফিসিয়েন্সি মুড ব্যবহার করেন তাহলে চার্জ সবচাইতে কম খরচ হবে এবং ল্যাপটপের ব্যাটারিও দীর্ঘদিন ভালো থাকবে। সাধারণ ইন্টারনেট ব্রাউজিং, অফিস ওয়ার্ডের কাজ ইত্যাদি করার জন্য এই মুড সবচাইতে ভালো। তবে আপনি যদি গেমিং করতে চান তাহলে বেস্ট পারফরমেন্স আপনাকে বেশি গতি দেবে।

পাওয়ার সেভিং মুড

ল্যাপটপের ডিসপ্লের সাইজ বড় কিংবা ব্যাটারির আকার কম হলে চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যেতে পারে। এজন্য আপনি ব্যবহার করতে পারেন পাওয়ার সেভিং মুড। অবশ্য চার্জ যখন ৩০% এর নিচে নেমে আসে তখন অটোমেটিক ভাবেই ডিভাইস পাওয়ার সেভিং মুডে চলে যায়।

স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিসপ্লে অফ এবং হাইবারনেশন

অফিস কিংবা বাসায় কাজ করার সময় হঠাৎ করেই ডেক্স থেকে উঠে যাই আমরা। এমতাবস্থায় ল্যাপটপের ডিসপ্লে অন থাকার কারণে চার্জ শেষ হতে থাকে। কিন্তু আপনি যদি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিসপ্লে অফ কিংবা হাইবারেশন হওয়ার সময় সেট করে দেন ল্যাপটপ ব্যবহার না করলে কিছুক্ষণ পর একাই ডিসপ্লে অফ হয়ে যাবে। ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার মধ্যে এটি অন্যতম। এমনকি অটোমেটিক স্লিপিং চালু রাখলেও পাওয়ার সাশ্রয় হয় অনেক।

ল্যাপটপের ব্রাইটনেস নিয়ন্ত্রণ করা

মোবাইলের মতো আধুনিক ল্যাপটপ গুলোতে অটো ব্রাইটনেস সুবিধা থাকে। এর কারণে আশেপাশের আলোর উজ্জ্বলতা অনুযায়ী এটির ব্রাইটনেসও স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। অধিক ব্রাইটনেস ব্যবহার করলে ব্যাটারি চার্জও দ্রুত ফুরিয়ে যায়। তাই অটো ব্রাইটনেস ব্যবহার করতে পারেন।

মাঝে মাঝে চার্জ খালি করা

বাসায় কিংবা অফিসে যদি আমরা চার্জার লাগিয়ে ডিভাইস ব্যবহার করি তাহলে দেখা যায় সবসময় সাথে চার্জ হয়ে থাকে। বিশেষ করে যাদের আইপিএস এর ব্যাকাপ রয়েছে। তাই মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে ব্যাটারির চার্জ খালি করুন। এতে করে ব্যাটারি লাইফ ভালো থাকবে। এটা শুধুমাত্র তারাই করবেন যাদের ডিভাইস সব সময় চার্জারের সাথে কানেকশন থাকে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ থাকে। তবে যাদের লোডশেডিং আছে কিংবা বাইরে ডিভাইসের ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজন নেই।

ডিভাইসের সাথে অন্যান্য গ্যাজেট সংযুক্ত করা

প্রয়োজনে আমরা ল্যাপটপের সাথে মোবা চার্জার, ইউএসবি ক্যাবল, পেনড্রাইভ, মাউস, কিবোর্ড, স্পিকার ইত্যাদি গেজেট গুলো যুক্ত করে থাকি। যেহেতু এগুলো সরাসরি ল্যাপটপ থেকে বিদ্যুৎ গ্রহণ করে তাই এর ব্যাটারির উপর বাড়তে চাপ পড়ে। খুব বেশি প্রয়োজন না হলে এই ধরনের বাড়তি যন্ত্রাংশ ব্যবহার করার থেকে বিরত থাকুন।

ইউপিএস ব্যবহার করা

যদি কোন ইলেকট্রিক ডিভাইসের বিদ্যুৎ সংযোগ বারবার বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাহলে সেটিতে স্বাভাবিকভাবে সমস্যা হতে পারে। তাই যাদের বাসায় ঘন ঘন লোডশেডিং হয় তারা ইউপিএস ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে ডিভাইসে নিরবিচ্ছিন্নভাবে একটি নির্দিষ্ট পাওরে বিদ্যুৎ প্রবাহ হবে এবং ডিভাইসে ভালো থাকবে। বলতে পারেন ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার এটি অন্যতম একটি উপায়।

অন্যান্য সচেতনতা

ল্যাপটপের ব্যাটারি ভালো রাখার জন্য উপরোক্ত উপায় গুলো ছাড়াও আরো কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সঠিক মানের চার্জার ব্যবহার করা। ডিভাইস কেনার সময়ের সাথে যে চার্জারটি দেওয়া থাকে সেটি নষ্ট হয়ে গেলে আমরা বাজার থেকে চার্জার কিনে থাকি। সেটা যদি ব্যাটারির কনফিগারেশনের সাথে ভালোভাবে ম্যাচ না করে তাহলে চার্জিং সমস্যা থেকে শুরু করে ল্যাপটপেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও সবসময় চেষ্টা করবেন দেয়ালের মূল কারেন্টের প্লাগ হতে চার্জার কানেকশন দেওয়ার।